এটা অত্যুক্তি নয় যে, পুরো পৃথিবীতে ইসলামী অর্থনীতির আলোকে আধুনিক মাসআলা সমাধান করতে চাইলে মুফতী তক্বী উসমানীর নাম না নিয়ে কোন গত্যান্তর নেই। অন্য শব্দে বললে তার থেকে ইস্তিফাদা না করলে তাহকীকই পূর্ণতা পাবে না।
আমাদের বাংলাদেশের অনেক উলামা মনে করতেন তক্বী উসমানী পুরো দস্তুর আধুনিক মানুষ। আমাদের দু একজন উস্তাজও এমন ধারণা করতেন।
কিন্তু মালিবাগ জামিয়ায় মুফতী তক্বী উসমানী সাহেব মাদরাসা মসজিদ মিলনায়তনে “তাসাওউফ” এর উপর যে মর্মস্পর্শী বয়ান করেছিলেন তা শুনে সকলেরই ভুল ভাঙ্গে।
তিনি সময়ের তালে নিজেকে পাল্টে ফেলেননি। যুগের চাহিদায় কেবল সঠিক রাহনূমায়ী করেছেন। তার আমল ও ব্যক্তিগত জীবন পূর্বসূরী সোনালী সালাফদের মতোই সাধাসিধে এবং তাক্বওয়াপূর্ণ।
বাংলাদেশের কোন মুফতী তাক্বী উসমানী দামাত বারাকাতুহুমের “ইসলাম আওর জাদীদ মায়িশাত ওয়া তিজারাত” পড়েননি এমন পাওয়া দুস্কর।
শাইখুল ইসলামের উক্ত তাজদীদী গ্রন্থটি নিয়ে বিতর্ক আছে খুব।
পাকিস্তানের জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়া বিন্নুরী টাউনের উলামাদের নেতৃত্বে পুরো পাকিস্তানের বিদগ্ধ মুফতীদের যৌথ উদ্যোগে উক্ত কিতাবের একটি ইলমী সমালোচনা গ্রন্থও প্রকাশিত হয়। যার নাম “মুরাওয়াজা ইসলামী ব্যাংকারী”। যাতে কেউ কেউ ইলমী রদের সাথে সাথে হযরতের শানেও কঠোর শব্দ উচ্চারণ করেছেন।
কিন্তু উক্ত বইটার আংশিক জবাবে লেখা মুফতী সাহেবের “গায়রে সূদী ব্যাংকারী” তিনি যে সহনশীলতা এবং আদবের সাথে স্বীয় বক্তব্য তুলে ধরেছেন, তা দেখে হযরতের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা বেড়েছে অনেক গুণ।
অনেকে অভিযোগ করেছেন যে, হযরত পাকিস্তানের মীযান ব্যাংকসহ অন্যান্য ইসলামী ব্যাংক থেকে বিপূল হাদিয়া বা বেতন পান। তিনি এসব ব্যাংকের শরীয়া বোর্ডের প্রধান।
এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ তিনি অত্যান্ত মাধুর্যপূর্ণ ভাষায় জবাব দিয়েছেন। জানিয়েছেন, তিনি কোন ব্যাংক থেকে কখনো অর্থ কড়ি গ্রহণ করেন না। তিনি ব্যাংকের দায়িত্বেও নেই। উম্মতকে সুদের “নহুসত” থেকে বাঁচাতেই কেবল তিনি নয়া আন্দাজে এসব তাহকীক প্রকাশ করেছেন।
এমন যোগ্য ইলমী ব্যক্তিত্ব হবার সাথে সাথে বুযুর্গ মানুষ শতাব্দীতে এক দুইজনই আসেন। ঘরে ঘরে, বা দেশে দেশে জন্মায় না।
ইলমী ও আমলী প্রায় বেশিরভাগ বিষয়েই তিনি উম্মতের জন্য গ্রন্থ রচনা করে সুবিশাল খিদমাত করেছেন। সারা বিশ্বের মুসলিমদের কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ করেছেন।
তিনি মানুষ। ফেরেশতা নয়। ভুল হতে পারে। কিন্তু তিনি এমন ভুল এখনো করেননি, যার জন্য তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালি দেয়া যায়।
যারা এসব করছেন এরা সমাজের আগাছা। নিম্ন শ্রেণীর কীট।
এসব আগাছা সব যুগেই ছিল। যুগের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের অপমান করতে আদা জল খেয়ে মাঠে নামতো। সেই আহমাদ বিন হাম্বল রহঃ থেকে ইমাম বুখারী রহঃ, ইমাম আবূ হানীফা রহঃ থেকে হুসাইন আহমাদ মাদানী রহঃ। সবারই সমালোচক ছিল। ছিল জানের দুশমনও। ফাঁকা বুলির অধিকারী ফাতওয়াবাজীকারী কিছু মোল্লা।
তাই আমরা কথিত মানহাজী গ্রুপের শাইখুল ইসলামের বিরুদ্ধে নগ্ন আক্রমণ দেখে অবাক হয়নি। এটা সেই পুরানো কথা। কালের চাঁদ আকাশে হাসবেই। কুকুরের ঘেউ ঘেউ নির্মল চাঁদের দিগন্ত প্রসারী আলো ম্লান করতে পারবে না।
এরা নিক্ষিপ্ত থাকবে ইতিহাসের আস্তাকুড়ে। তক্বী উসমানী যিন্দা থাকবেন ইতিহাসের পাতায়। স্বর্ণাক্ষরে। কোটি মানুষের হৃদয়ের মনিকোঠায়। ইনশাআল্লাহ। ছুম্মা ইনশাআল্লাহ।
……ফেসবুক থেকে নেয়া……..
কুরআন-সুন্নাহর আলোকে সংবাদ প্রচার নীতিমালার প্রতি লক্ষ্য রেখে কাজ করছে একঝাঁক সংবাদকর্মী। সত্য-সঠিক, বস্তুনিষ্ঠ যে কোন সংবাদ জানতে- জানাতে নিয়মিত লগইন করুন Sunnah24.com
আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিল্প-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ যে কোন সংবাদ প্রচারে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
শুভেচ্ছান্তে-
আ ফ ম আকরাম হুসাইন
সম্পাদক, সুন্নাহ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Leave a Reply